কানাডায় পেশাদার প্রকৌশলী হিসেবে চাকরি পেতে ভিয়াশেচলাভ সামসোনেঙ্কোর অন্তত দুই বছরের অভিজ্ঞতা লাগবে। সুতরাং, আরও অনেক নবাগতের মতো তিনিও তার যোগ্যতার চেয়ে নিচের পদে চাকরি শুরু করেছেন এবং এ থেকে উত্তরণের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন।
যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গত মে মাসে কানাডায় আসেন সামসোনেঙ্কো। এই খাতে দুই দশকের অভিজ্ঞতার কোনো প্রাসঙ্গিকতা কানাডায় যে নেই সেটা ভালো করেই জানেন তিনি। তারপরও কানাডায় আসার এক মাসের মধ্যে একই খাতে একটি চাকরি তিনি জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছেন।
ব্রিটিশ কলাম্বিয়াভিত্তিক একটি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানে এস্টিমেটরের কাজ করা সামসোনেঙ্কো বলেন, কানাডায় আনতে পেরে এবং আমার পছন্দের কাজটি করতে পেরে আনন্দিত। আমার পছন্দের খাতে চাকরি খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি আমাকে। তবে কানাডায় পেশাদার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করতে কিছুটা সময় লাগবে। এজন্য তাকে একাধিক পরীক্ষা দিতে হবে। সেই সঙ্গে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে।
সামসোনেঙ্কোর এই ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। অভিবাসন কর্মীরা বলছেন, নবাগতদের প্রায় সময়ই তাদের যোগ্যতার সঙ্গে যায় এমন অর্থপূর্ণ চাকরি খুঁজে পেতে ধকল পোহাতে হয়। শরনার্থী নেতৃত্বাধীন অলাভজনক সংস্থা জাম্পস্টার্ট রিফিউজি ট্যালেন্টের নিয়োগ পরিচালক ড্যারেল পিন্টো বলেন, অনেক নিয়োগদাতাদের যে ধরনের কানাডিয়ান অভিজ্ঞতার প্রয়োজন তা না থাকার কারণেই এমনটা হচ্ছে। পেশাজীবী হিসেবে নিয়োগদাতারা যখন কাউকে নিয়োগ দিতে যান তখন তাদের মধ্যে দক্ষতা ও সাংস্কৃতিক সংশ্লিষ্টতার অভাব বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
অন্য দেশের শিক্ষা এখানকার সমতুল্য না হওয়াও আরেকটি বড় বাধা, নিয়োগদাতাদের যেটা বোঝা উচিত। পিন্টো বলেন, কিছু বিদেশি বিশ^বিদ্যালয় আছে যেখানকার গ্র্যাজুয়েটদের মান কানাডিয়ান বিশ^বিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের চেয়েও উন্নত। অনেক নবাগত আমাকে এ কথাও বলেছেন যে, কানাডিয়ান বাজারের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে অনেক বেশি উন্মুক্ত।
ভিক্টোরিয়া কুলাকভস্কার নিজ শহর ওডেসায় যুদ্ধ পৌঁছে যাওয়ার পর গত আগস্টে তিনি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে নিউ ব্রান্সউইকে পালিয়ে আসেন। কুলাকভস্কা ও তার স্বামী দুজনেই পেশাদার আইনজীবী এবং ইউক্রেনে তারা একটি লিগ্যাল ফার্ম পরিচালনা করতেন। কিন্তু কানাডায় আসান পর তিনি জানতে পারেন যে তার ডিগ্রি এখানে স্বীকৃত নয়। এর পরিবর্তে তিনি নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে যোগ দেন।
তিনি বলেন, তার স্বামী ফ্রেডেরিক্টনে এবটি ইংলিশ ক্লাসে যাচ্ছেন এবং তিনিও পেশা বদলের উপায় খুঁজছেন। তিনি ট্যাক্সি বা ট্রাক চালক হওয়ার চেষ্টা করছেন।