শুক্রবার - এপ্রিল ১৯ - ২০২৪

কানাডার নিরাপত্তার প্রতি কতটা হুমকি

বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত বৃটিশ আইসিস বধু শামীমা বেগমের কথা মনে আছে নিশ্চয়। ২০১৫ সালে দুই বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে শামীমা  লন্ডন থেকে তুরস্ক হয়ে সিরিয়া গিয়েছিল জিহাদে যোগ দিতে। সেখানে এক ডাচ বংশোদ্ভূত জেহাদীকে বিয়ে করে পর পর তিনটি বাচ্চার জন্ম দেবার পাশাপাশি নিয়মিত কল্লা কাটার জিহাদে অংশ নিয়েছিল শামীমা।  ২০১৮ সালে কথিত খিলাফতের লড়াইয়ে রাক্কাতে   সিরিয়ার সরকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর শামীমা’কে বৃটেনে ফেরত পাঠাতে চেয়েছিল তারা।

- Advertisement -

‘আমার ভুল হয়েচে,আমাকে মাফ করে দেন’ একথা বলে শামীমা বৃটিশ সরকারের কাছে আবেদন করেছিল তাকে যেন  ফেরত নেয়া হয় । কিন্তু তদানীন্তন বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ নাভিদ বৃটেনের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য শামীমা হুমকির কারন হতে পারে এই বিবেচনায় তার নাগরিকত্ব বাতিল করে দেয়। এরপর  বৃটেন তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পরামর্শ দিলে বাংলাদেশ সরকার পর্যন্ত তাকে গ্রহণে  অস্বীকৃতি জানানোর পর গত ছ’বছর ধরে  শামীমা সিরিয়ার আই সিস কন্সেট্রেশণ ক্যাম্পেই সে  বসবাস করছেন।

বৃটেনের হাইকোর্ট তার বয়সের বিবেচনায় নাগরিকত্ব ফেরত দেবার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করলেও ইংল্যান্ডের স্পেশাল কোর্ট তার নাগরিকত্বের পুনঃবহালের বিষয়টি আজ নাকজ করে দেয়। বৃটেনের সুশীল সমাজ হয়ত শামীমা’কে একটা বুদ্ধি শিখিয়ে দিয়েছিল যে হিজাব ছেড়ে আলট্রা মর্ডার্ণ জিন্স শর্টস পরে একটা ছদ্মবেশ ধরতে যাতে সে বোঝাতে পারে তার মধ্যে আর আগের সেই জেহাদী জোস নেই । সে অনুযায়ী শামীমা এখন সব সময়ই ক্যাম্পে শার্ট প্যান্ট পড়ে থাকে। সম্প্রতি  টাইম ম্যাগাজিন ভোগ ফ্যাশনের মতো তার একটি খোলা মেলা পোশাকের স্টরি তৈরি করেছিল যাতে এসব দেখে  বৃটিশ সরকারের মন গলে। শামীমার বৃটিশ আইনজীবী বলেছিল ..শামীমা স্বেচ্ছায় আইসিসে যায়নি, তাকে দালালরা ফুসলিয়ে নিয়ে গেছে। কিন্তু এসব ইমোশনাল যুক্তিতে কিছুতেই কিছু হল না। বৃটিশ শিশু বিষয়ক উপ মন্ত্রী বলেছেন .  এটা শামীমার ভং ধরার একটা কৌশল। সুযোগ ও উপযুক্ত পরিবেশ পেলে সে যে কোন সময়ে বৃটেনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে।

কনসেন্ট্রশন ক্যাম্পে এক সাংবাদিকের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শামীমা স্বীকার করে নিয়েছে সে জঙ্গিবাদে লিপ্ত ছিল। তার মুখভঙ্গি ও কথা বলার স্টাইল বলে দেয় উপরে উপরে সে যতই খোলামেলা পোশাকে  …. আমার ভুল হয়েচে, বলুক না কেন ভেতরে ভেতরে এখনও সে ভয়ন্কর জঙ্গি। এদের তাকিয়াবাজি ও  মিষ্ট কথায় ভুলতে নাই। কানাডা সরকার ৬৭ জন আইসিস জঙ্গিদের সিরিয়া থেকে ২০১৯ সালে কানাডায় আদর সোহাগে ফেরত নিয়েছিল, এরা ভবিষ্যতে কানাডার নিরাপত্তার প্রতি কতটা হুমকি হতে পারে সে বিষয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির কোন মনিটরিং আছে বলে আমার জানা নেই।

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent