শুক্রবার - মার্চ ২৯ - ২০২৪

আমার বন্ধু শেখর ইমতিয়াজ

আমার বন্ধু শেখর ইমতিয়াজ ঢাকা সিটি কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন।

- Advertisement -

পড়াতেন বাংলা সাহিত্য। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দ্রুত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারতেন বলে শিক্ষক হিশেবে তিনি ছিলেন তুমুল জনপ্রিয়। এরপর জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেছেন বহুদিন। সম্প্রতি অবসরে গেছেন বাংলার এই অধ্যাপক মহাশয়।

শেখর ইমতিয়াজের আরেকটি পরিচয় তিনি কথাশিল্পী। এক সময় তাঁর লেখা চমৎকার সব গল্প প্রকাশিত হয়েছে দেশের প্রধান প্রধান দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায়। তাঁর প্রথম গল্পের বই ‘বিধি নেই, অনঢ় বিধিলিপি বেরিয়েছিলো নব্বুই দশকের সূচনায়।

আজ বহুদিন হলো, ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক জীবনে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা-দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার বন্ধুটি বেছে নিয়েছেন একাকী নিভৃতচারী নিস্তরঙ্গ নিঃসঙ্গ একটা জীবন। ইটপাথরের পাষাণ ঢাকা শহরের যাবতীয় কোলাহল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে বৃক্ষ-নদী-বিল আর পাখির সান্নিধ্যে থাকার বাসনায় চলে গেছেন কালিয়াকৈরে। একমাত্র কন্যাটি ছাড়া এই জীবনে আর কোনো পিছুটান নেই তাঁর। লেখালেখিও প্রায় ছেড়েই দিয়েছেন। এমনকি কোথাও, কোনো সাহিত্য সাময়িকীতেও নিয়মিত নিজের অনুপস্থিতি জারি রেখেছেন শেখর।

ফেসবুকে আছেন বটে, কিন্তু সেখানেও কয়েক লাইন, বড়জোর এক প্যারার একটা স্ট্যাটাস মাঝে মধ্যে লেখেন বটে কিন্তু সেগুলো প্রায়শই এতোটাই নিজের সঙ্গে নিজের আলাপচারিতা টাইপের যে তাতে পাঠকের প্রবেশের বা আগ্রহ প্রদর্শনের কোনো সুযোগই থাকে না।

অবাক কাণ্ড, অতিসম্প্রতি, বইমেলার আগে আগে, সবাইকে অবাক করে দিয়ে জিনিয়াস পাবলিকেশন্স থেকে নিজের আস্ত একটা বই বের করে ফেললেন তিনি ‘শেখর ইমতিয়াজ নির্বাচিত গল্প’ নামে! আরো অবাক কাণ্ড–বইটির উৎসর্গপত্রে মাত্র পাঁচটি শব্দে তিনি উৎকীর্ণ করেছেন দুটি লাইন–‘লুৎফর রহমান রিটন আমার প্রিয়বন্ধু’।

এই উৎসর্গটি পেয়ে ভীষণ আপ্লুত আমি।

বাংলা-বাঙালি-বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশপ্রশ্নে আপসহীন  দেশপ্রেমী একজন মেধাবী মানুষের প্রিয়বন্ধু হতে পারাটাও আমার এক জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য প্রাপ্তির স্মারক হয়ে থাকলো।

জনাব শেখর ইমতিয়াজ, মানুষের জীবন একটি রহস্যময় জটিল মিথষ্ক্রিয়ার ফলাফল। নিষ্ঠুর নিয়তি আপনার সঙ্গে কানামাছি খেলেছে বারবার। ভূপাতিত হতে হতে বারবার আপনি উঠে দাঁড়িয়েছেন।

ভালো থাকবেন স্যার…

অটোয়া, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent