প্রযুক্তিখাতে কর্মী ছাঁটাইয়ের আরেকটি ঢেউ দর-কষাকষির খেলায় এ খাতের নিয়োগদাতাদের সুবিধাজনক অবস্থান ফিরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাডার প্রযুক্তি শিল্পের সদস্যরা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেতন ও কাজের ভূমিকা নিয়ে দর-কষাকষির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকর্মীদের বেশি ক্ষমতা ছিল।
উইমেন’স টেক কালেক্টিভ টোস্টের প্রধান নির্বাহী মারিসা ম্যাকনিল্যান্ডস বলেন, মূলত মহামারিকালে এ খাতের দ্রুত বৃদ্ধি এবং তাকে ধরে রাখতে মেধাবিদের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এখন কর্মী ছাঁটাই অ্যামাজন ও গুগলের মতো প্রখ্যাত প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। কাজ হারানো কর্মীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, যা কোম্পানিগুলোকে কম বেতনে কর্মী নিয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, গত দুই থেকে আড়াই বছরে কর্মীদের সুবিধা ছিল অনেক বেশি। তাদের ক্ষমতা ছিল এবং স্বল্পতাও ছিল। এখন আমরা এর বিপরীত পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি।
টরন্টোর ডিএমজেড টেক হাবের নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ স্নোবারও একই পরিস্থিতি দেখছেন। তিনি বলেন, এটা শুরু হয়েছিল ১২ মাস আগে, যখন কোম্পানিগুলো নিয়োগে গতি আনে এবং ঋণও সহজ ছিল, যা কর্মীদের বেশি বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা এনে দিয়েছিল।
বর্তমানে মূল্যস্ফীতির অনেক বেশি, সুদের হারও বাড়ানো হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে এবং অনেক অর্থনীতিবিদ মন্দার পূর্বাভাস দিচ্ছেন।
স্নোবার এমন এক সময় এ মন্তব্য করলেন যখন গুগলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। পিচাই কর্মীদের উদ্দেশে এক খোলা চিঠিতে বলেছেন, গত দুই বছরে আমরা নাটকীয় প্রবৃদ্ধি দেখেছি। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ভিন্ন ধরনের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় আমরা কর্মী নিয়োগ দিয়েছিলাম, যা এখনকার থেকে একেবারেই ভিন্ন।
গত বসন্ত থেকেই প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কর্মী কমাচ্ছে। ভোক্তারা মহামারি-পূর্ববর্তী অভ্যাসে ফেরত যাওয়ার ফলে বিনিযোগকারীদের আগ্রহ কমা এর মূল কারণ। অ্যামাজন সম্প্রতি ১৮ হাজার, মাইক্রোসফট ১০ হাজার এবং উইওয়ার্ক ৩০০ কর্মী ছাঁটাই করেছে।
কানাডায় লাইটস্পিড ৩০০, ক্লাচ ১৫০ এবং হুটস্যুট ৭০ কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। এক্ষেত্রে তারা শপিফাই ইনকর্পোরেশন, মেটা, নেটফ্লিক্স, লিফট ও স্ট্রাইপের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছে। গত বছর এসব কোম্পানিও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে।
লেঅফসডটফাই-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শুরু থেকে বিশ^ব্যাপী ৫৫ হাজার ৩২৪ জন প্রযুক্তিকর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ২০২২ সালের শেষে চাকরি খুইয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ১২৬ জন প্রযুক্তিকর্মী।