শুক্রবার - এপ্রিল ১৯ - ২০২৪

কেমন ছিলো ২০২২?

ছবিইয়াসি কারনিগাং

২০২২ সালটা ছিল কিছুটা সুস্থির। বৈশ্বিক মহামারীর কবল থেকে বেরিয়ে আসার বছর। মাস্ক ম্যান্ডেট, ভ্যাক্সিন ম্যান্ডেন ইত্যাদি বাধ্যবাধকতা থেকে বেরিয়ে আসার বছর।

দীর্ঘ দুটি বছর কর্মক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক  মাস্ক পরে থাকতে হয়েছে। এখন আর সেই বাধ্যবাধকতা নেই। ২০২২ সালে কাজের ক্ষেত্রে অনেকের সাথে নতুন পরিচয় হয়েছিল। সেই সময় তারা মাস্ক পরে কাজে আসতো। ফলে অর্ধেকটা মুখ ঢেকে থাকায় তাদের চেয়ারা দেখার সুযোগ হয়ে উঠেনি ।

- Advertisement -

মাস্ক ম্যান্ডেট উঠে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে  অনেকেই আর মাস্ক পরে না। এদেরকে মাস্ক ছাড়া চিনতে প্রথম প্রথম একটু অসুবিধা হয়েছে। অনেককে নতুন করে আবিষ্কার করায় মনে হয়েছে, এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে মাস্ক পরা অবস্থাতেই বেশ মানাতো।

এখন মনে হয়, আমরা দীর্ঘ দিন আসলে মুখোশ পরে ছিলাম। দীর্ঘ দিন মুখোশ  পরে নিজেদের আড়াল করেছিলাম। জানি না, এর মাধ্যমে প্রকৃতি আমাদের কাছে কি বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়েছিল!!

২০২২ সালটা মোটামুটি ভালোই কেটেছে। তবে একটি মানুষের বিদায় আমাকে অনেক ভাবায়।  Saeed Jadid  দাদা এই বছর মে মাসের দিকে চির বিদায় নিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন।

দুরারোগ্য ক্যান্সারের সাথে যুদ্ধে তিনি জয়ী হতে পারেননি। তবে জীবনের যে যুদ্ধ তিনি লড়ে গেছেন সেখানে তিনি জয়ী হয়েছেন।

একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতে গিয়ে শেষবার তার সাথে কথা হয়েছিল। আমাকে তখন বলেছিলেন, “রেজাউল, আপনাকে বলা হয়নি। আমার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। প্রতিদিন  হাই ডোজের মেডিসিন নেওয়ায় সন্ধ্যার দিকে চোখ খোলা রাখতে পারি না। তাই অনুষ্ঠানে মনে হয় যেতে পারবো না। যদি ভালো বোধ করি আপনাকে জানাবো।”

সাঈদ জাদীদ দাদা অনুষ্ঠানের ঠিক আগের দিন ম্যাসেজ করে জানিয়েছিলেন, তিনি ভালো বোধ করছেন না। আসতে পারবেন না। অনুষ্ঠানটি ছিল ১২ ই ফেব্রুয়ারি। তিনি ঠিক এর কয়েক মাস পরেই চলে গেলেন।

পরে আকবর হোসেন দাদার কাছ থেকে শুনেছিলাম, চিকিৎসা চলার এক পর্যায়ে ডাক্তার সাঈদ জাদীদকে  জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি উইল করেছেন কিনা। তখন তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, সময় খুব একটা বেশি নেই। হয়ত দুই সপ্তাহ হাতে রয়েছে কিংবা তারও কম। তিনি নিকটজনদের জানিয়েছিলেন, সময় বেশি নেই। যার যার দেখা করার খুব তাড়াতাড়ি তা করে ফেলতে হবে।

আমাদের মধ্য থেকে তার প্রস্থানটা ছিল অনেকটাই মহা মানবের প্রস্থানের মতো । আমার জীবনে দেখা, নিপাট একজন ভদ্রলোক। ভিতরে বাইরে একই রকম একজন মানুষ। খাঁটি মানুষ। যা বিশ্বাস করতেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার থেকে সরে দাঁড়াননি। তিনি চলে গিয়েছেন কিন্তু রেখে গেছেন খন্ড খন্ড কিছু  স্মৃতি, ফেসবুকে কিছু কমেন্টস, তর্কাতর্কি আর একরাশ ভালোবাসা, স্নেহ।

কেন যেন বছরের শেষ দিনটিতে তাঁকে খুব মনে পড়ছে। আমার জীবনে যে কয়জন মানুষ চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন সাঈদ জাদীদ তাদের মধ্যে একজন এবং অন্যতম একজন।

জীবন চলমান। মৃত্যুতেই একজনের জীবনে সেই চলমানতার অবসান ঘটে।

নানা ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এই বছরের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। জীবনে চলার পথে আমি কিছু মানুষকে পেয়েছি যারা আমার জীবনকে আলোড়িত করে, আনন্দিত করে।তাদের প্রতি আমার  ভালোবাসা।তারা আছে বলেই জীবন অনেক সুন্দর।

আসন্ন নতুন বছর আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। inflation, recession ইত্যাদি শব্দগুলির সাথে আমাদের একধরনের সখ্যতা গড়ে উঠবে।

২০২৩ সাল নিয়ে রাশিয়ার  প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ কিছু  ভবিষ্যতবানী করেছেন। যেমনঃ

১) নতুন বছর ২০২৩ সালে ইউরোপের অন্যতম দুই শক্তিধর দেশ ফ্রান্স এবং জার্মানির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হবে

২)  শেষ পর্যন্ত ইইউ ভেঙে যাবে

৩) একইভাবে গৃহযুদ্ধে জড়াবে যুক্তরাষ্ট্র

৪) এই যুদ্ধ দেশটির ধনকুবের এলন মাস্ককে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বানিয়ে দেবে।

মেদভেদেভের এই সব আজগুবি ভবিষ্যতবানীগুলি দেখে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভবিষ্যতবানী শুধু বানীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, ফলে না।

স্কারবোরো, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent