বুধবার - এপ্রিল ২৪ - ২০২৪

গণতন্ত্র এবং আমাদের শিক্ষা

আমেরিকার যদি বাংলাদেশের গনতন্ত্র নিয়ে এতই মায়া কান্না করা লাগে তবে তাদের উচিৎ যে সব দেশে গনতন্ত্র নেই সেই সব প্রতিটি দেশের গনতন্ত্রের জন্য মায়া কান্না করা।

- Advertisement -

কিন্তু বাস্তবে তা হয় না।

বাস্তবে যে সব দেশ তাদের পা চাটাচাটি করে সেই সব দেশে গনতন্ত্র না থাকলেও কোন সমস্যা নেই। সেই সব দেশকে তারা খোঁচাখোঁচিও করে না।আর যে সব দেশ পা চাটাচাটি করতে পারে না সেই সব দেশে গনতন্ত্র না থাকলে তাদের কাছে মহা সমস্যার বিষয় মনে হয়। তখন চলে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা, পায়ে পা লাগিয়ে ঝামেলা পাকানো, নানারকম ইস্যু তৈরি করার টালবাহানা।

এই সব করা হয় কোন দেশকে সাইজ করার জন্য, তাদের পদানত করার জন্য। গনতন্ত্রের বুলি, মানবাধিকারের বুলি, এই সবই তাদের শিয়াল পন্ডিতের একই কুমির ছাঁনা বার বার দেখানোর মতো ব্যাপার।

দেশটির দ্বিমুখীতার ভুরিভুরি নজির দেখানো যায়। কাছের দেশ ভারতেরই উদাহরণ দেই। আমেরিকায় এক সময় নরেন্দ্র মোদী প্রবেশ করতে পারতো না। তার উপর নিষেধাজ্ঞা ছিল কিন্তু তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবার পর সেই নিষেধাজ্ঞা আর নাই। আমেরিকায় এখন মোদী-জীর অনেক কদর। তার জয়জয়কার।

কয়েক মাস আগেও আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেন সৌদি আরব ভ্রমনে গিয়ে সৌদি সাংবাদিক  জামাল খোশেগিকে  হত্যার  দায়ে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে হুমকিধামকি দিয়ে আসলেন।বিচার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।  উদ্দেশ্য ছিল, মোহাম্মদ বিন সালমান যাতে ইউক্রেন প্রশ্নে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় এবং চীন থেকে যেন  দূরে থাকে। বিন সালমান বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বাইডেনকে চার পয়সাও দাম দেয়নি।

সাম্প্রতি শুনি, মোহাম্মদ বিন সালমানকে ইউএস ইমিউনিটি দেওয়া হয়েছে।

“Mohammed bin Salman: Saudi leader given US immunity over Khashoggi killing”

যাকে এই কিছু দিন আগেই হুমকি-ধামকি দেওয়া হলো মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সুর পাল্টে সেই একই ব্যক্তিকে  ইউএস ইমিউনিটি দেওয়া হলো। এটাও একধরনের বার্গেনিং।

এতে খুব একটা কাজ হয়েছে কিনা জানি না তবে কিছু দিন আগে চীনের প্রেসিডেন্ট সৌদি সফরে গিয়ে ভালো সংবর্ধনা পেয়েছে।

এই হলো আমেরিকা!!  খুবই বিচিত্র এর রূপ,এর গন্ধ,এর বর্ণ!  আমেরিকার সব আচরন তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। স্বার্থের বাইরে আমেরিকা এক পাও ফেলে না।

এই দেশটি বাংলাদেশকে তেমন কিছু দেয়নি বরং সব সময় বাংলাদেশের বিপক্ষে কাজ করেছে।

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া  থেকে শুরু করে সপ্তম নৌবহর প্রেরন, হেনরী কিসিঞ্জারের কিসিঞ্জারী বুদ্ধিতে বিশ্ব দরবারে  বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ; হেন অনৈতিক কাজ নেই যা আমেরিকা বাংলাদেশের বিপক্ষে করেনি।

এখনো চলছে তাদের সেই পুরনো খেলা। বাংলাদেশকে পদানত করার নানা রকম ফন্দিফিকির বের করা হচ্ছে। পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া, সেই শিয়াল পন্ডিতের একই কুমির ছাঁনা “গনতন্ত্র” “মানবাধিকার” প্রদর্শন। আবার সেই পুরনো গৎবাঁধা  খেলাগুলি ফিরে এসেছে স্ব-মহিমায়।

কিন্তু ১৯৭১ আর ২০১৩, এক নয়। জল অনেক গড়িয়েছে। বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। এই ঝুড়িতে এখন অনেক কিছু জমা হয়,তলা দিয়ে বেরিয়ে যায় না। জমা হয়, হচ্ছে।

আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ পদানত হবে না, মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে।

তবে দেশজ কিছু কোলাবরেটর একাত্তুরেও ছিল, এখনো আছে, থাকবে।

স্কারবোরো, অন্টারিও, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent