কানাডার ক্ষুদে সকার !

কানাডার ক্ষুদে সকার !

যদিও কানাডা কোনো হট-ফেভরিট টিম না, বা রাংকিংএর দিক থেকে অনেক নিচে তথাপি এবারের বিশ্বকাপ কানাডার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ ৩৬ বছর পরে তারা আবার বিশ্বকাপে খেলার চাঞ্চ পেয়েছে। এখানে আইস-হকি, বাস্কেট বল বা বেসবল যেমন জনপ্রিয় সকার তেমন জনপ্রিয় নয়, তবে ইদানিং সেটির পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে এবং এরাও সেই ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, তাই নতুন প্রজন্মের খেলোয়ারদের  জন্য এবং আমাদের সবার জন্য কানাডার এবারের সকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বিগত দুটি খেলাই তারা ভালো খেলেছে যদিও জেতা হয়নি। টিম কানাডা আমাদেরকে একেবারে হতাশ করেনি। বিশেষ করে আজকে খেলার একেবারে শুরুতেই আলফানসো সুন্দর একটি গোল উপহার দিয়েছে, এবং কানাডার জন্য হিস্ট্রি তৈরী করেছে। তার এই গোল সবাই উপভোগ করেছে। কয়েকবার বিশ্বকাপ খেলা দুটি দলের সাথে নতুন হিসাবে তারা ভালোই খেলেছে। আমরা আশা করছি আগামী বছরগুলিতে তারা তাদেরকে আরো নিপুন করে তুলবে এবং পরবর্তী বিশ্বকাপে আমাদেরকে আরও ভালো খেলা উপহার দিবে।

এই জাতীয় পরাজয়কে পরাজয় হিসাবে দেখতে নেই। এটি আসলে নতুন করে নতুন কিছু শেখার আর এক সুযোগ। আমাদের জীবনেও ঠিক এমনিভাবে ভাবতে হয় এবং সামনে আগাতে হয়।

আজকে সারা কানাডার ফুটবলপ্রেমীরা খেলা উপভোগ করেছেন। এদের মধ্যে আমাদের বাসার অনতিদূরে হাইপার্ক এলাকায় একদল ক্ষুদে সকার খেলোয়াড় এবং ক্ষুদে দর্শক জড়ো হয়েছিল আজকের খেলা দেখতে। খেলা শেষে একজন TV রিপোর্টার তাদেরকে আজকের খেলা সমন্ধে তাদের অনুভূতি জানতে চায়। আমি তাদের উত্তর শুনে এতই Impressed যে সেই সমন্ধে কিছু না লিখে পারলাম না। এই প্রতিটি ক্ষুদে বালক যেন এক একজন Motivational Speaker. কানাডা হেরে গেছে সে জন্য তাদের খুব বেশি আফসোছ দেখা যায়নি, বরং তারা cheer up করেছে। তারা বলেছে আজকের খেলা, আলফানসোর গোল ইত্যাদি তাদেরকে অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছে এবং তারা সেই অনুপ্রেরণা নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে এবং ভবিৎষতে তারাও একদিন কানাডার নেতৃত্ব দিবে।

নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে এগুলিইতো শুনতে ভালো লাগে। আমার খুব ভালো লেগেছে যে তারা কোনো খেলোয়ারকে তিরস্কার করেনি, কাউকে গালাগাল করেনি বা কাউকে ছোট করেও দেখেনি। আসলে এটাইতো হওয়া উচিৎ। এই ছোটো বাচ্চাগুলোর কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। আশা হারানো বা হতশা জীবনকে স্থবির করে দেয়। আমার ব্যাক্তিগত পেশার সাথে Hope বা আশা ব্যাপারটি খুব নিবিড় ভাবে জড়িত। সহায়সম্বল এবং আশাহীন মানুষদের জীবনে আশাকে পুনর্জীবিত করা আমাদের কাজের অন্যতম একটি বিষয়, তাই কোনোকিছুর মধ্যে  আশা বা অনুপ্রেণার গন্ধ থাকলে সেদিকেই চোখ/কান চলে যায়।

আসুন আমরা সবাই যেন আমাদের এই ক্ষুদে বাচ্চাদের মতো জীবনের কোনো বাধা, সঙ্কট বা পরাজয়ে নিজেকে স্থবির না করে ফেলি, বরং সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আবার সামনে আগাতে থাকি, তাহলে সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে অবশ্যই সাহায্য করবেন। বিশেষ করে আমরা যেন আমাদের সন্তানদেরকে এভাবেই শিক্ষা দেই, তাদের কোনো ধরণের ভুলভ্রান্তির কারণে যেন তাদেরকে বকাবকি, মারধর বা তার অন্য বন্ধুদের সাথে তুলনা করে তাদের মনকে ছোট না করে দেই।

টরন্টো, কানাডা

- Advertisement -

Read More

Recent