মঙ্গলবার - এপ্রিল ১৬ - ২০২৪

হাইতিতে সামরিক সরঞ্জাম পাঠাল কানাডা


হাইতিতে নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে সহায়তার ব্যাপারে কানাডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এরই অংশ হিসেবে ফেডারেল সরকার শক্তিশালী গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পুলিশকে সহায়তা করতে সামরিক যান ও অন্যান্য সামগ্রী পাঠিয়েছে। এর আগে হাইতি সরকার দ্রুত বিদেশি সৈন্য মোতায়েনের অনুরোধ জানিয়েছিল।
এক বিবৃতিতে ট্রুডো বলেন, এসব সরঞ্জাম সহিংস অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহৃত হবে এবং তা নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে সহায়তা করবে। হাইতির জনগণকে রক্ষা ও তাদের সেবা দিতে হেইশিয়ান ন্যাশনাল পুলিশের কর্মকান্ডকে সহায়তা করার ব্যাপারে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
কানাডার ঈক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সরঞ্জাম সহিংসতা ও গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সহায়তা সরবরাহে বিঘœ সৃষ্টিকারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে হেইশিয়ান ন্যাশনাল পুলিশের লড়াইয়ে সহায়ক হবে এসব সরঞ্জাম। কারণ, অপরাধীরা কলেরার ছড়িয়ে পড়া রোধের উদ্যোগকেও বাধাগ্রস্ত করছে।
শক্তিশালী একটি গ্যাংয়ের একটি জ্বালানি টার্মিনাল ঘিরে ফেলা ও প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরির পদত্যাগ দাবির এক মাসেরও বেশি সময় পর এসব সরঞ্জাম পৌঁছেছে হাইতিতে। এছাড়া বিক্ষোভকারীরাও জ¦ালানির ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রধান প্রধান শহরগুলোর সড়ক অবরোধ করেছে। জ¦ালানিতে আর কোনো ভর্তুকি দেওয়ার সামর্থ্য সরকারের নেই বলে গত সেপ্টেম্বরে ঘোষণা দেন হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরি।
হাইতির ন্যাশনাল ডিজআর্মামেন্ট, ডিসম্যান্টলিং অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন কমিশনের পরিচালকের তথ্য অনুযায়ী, জি৯ অ্যান্ড ফ্যামিলি নামে পরিচিত গ্যাংটি মন্ত্রিসভায় নিজেদের অবস্থান দাবি করে আসছে। সহিংতা ও জ্বালানি টার্মিনালের অবরোধ অবসানে হেনরি ও ১৮ সদস্যের মন্ত্রিসভা বিদেশি সৈন্য মোতায়েনের অনুরোধ জানান।
২০২১ সালের জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট জোভেনেল ময়েস নিহত হওয়ার পর থেকে হাইতিতে গ্যাংগুলোর বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নতুন কিছু নয়। কিন্তু আগের দাবিগুলো নিয়ে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর সহায়তায় দ্রুত পূরণ করে পুলিশ। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, হাইতির রাজধানী পোর্র্ট-আউ-প্রিন্সের প্রায় ৬০ শতাংশ বিভিন্ন গ্যাংং নিয়ন্ত্রণ করছে। হাইতির কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন যে, পরিস্থিতিতে বর্তমানে ভয়াবহ এবং পানি ও মৌলিক উপকরণের সীমাবদ্ধতার কারণে সম্প্রতি দেখা দেওয়া কলেরার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যেতে পারে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, হাইতিতে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১ লাখ শিশু মারাত্মক অপুষ্টিতে ভুগছে এবং কলেরার ঝুঁকিতে রয়েছে তারা। হাইতির এ সংকট শিশুদের সংকট।
জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর হিসাবে হাইতির ৪৭ লাখ মানুষ মারাত্মক ক্ষুধার সম্মুখীন। এর মধ্যে ১৯ হাজার প্রথমবারের মতো দুর্ভিক্ষের মুখে রয়েছে। এদের বসবাস গ্যাং নিয়ন্ত্রিত পোর্ট-আই-প্রিন্সের সিটে সোলেইলি বস্তিতে।
নারীদের জন্যও বড় ধরনের সংকট তৈরি করছে। জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল বলেছে, হাইতির ৩০ হাজার গর্ভবতী নারী ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ, জ্বালানির অভাবে হাইতির তিন-চতুর্থাংশ হাসপাতাল সেবা দিতে পারছে না।
এছাড়া ঘ্যাংয়ের সদস্যরা ধর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। হাইতিতে জাতিসংঘের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা হেলেন লা লিমে সাংবাদিকদের বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও যৌন নির্যাতন আশঙ্কাজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে।

- Advertisement -

Read More

Recent