বৃহস্পতিবার - এপ্রিল ২৫ - ২০২৪

গিটারের জাদুকর আইয়ুব বাচ্চুকে হারানোর চার বছর

বাংলা ব্যান্ড সংগীতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। তিনি আবার তাকে বলা হতো গিটারের জাদুকর। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর লাখো ভক্ত, পরিবার পরিজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান সবার প্রিয় আইয়ুব বাচ্চু। এদিন সকালে নিজ বাসায় তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই অবস্থায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

- Advertisement -

বছর ঘুরে আবার এলো সেই দিনটি। প্রয়াত ব্যান্ড কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। এদিন প্রিয় শিল্পীকে নানাভাবে স্মরণ করার কর্মসূচি তার পরিবার, সহকর্মী ও ভক্তদের। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে আইয়ুব বাচ্চু স্মরণে রয়েছে বিশেষ আয়োজন। সেসব অনুষ্ঠানে শোনানো হবে তার জনপ্রিয় গানগুলো। আলোচনা হবে বাচ্চুর জীবনের নানা বিষয় নিয়ে।

আইয়ুব বাচ্চুর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে মঙ্গলবার ১২টার দিকে তার একদল ভক্তকে রাজধানীর মগবাজারের ওয়ারলেস এলাকায় খাবার বিতরণ করতে দেখা গেল। কয়েকটি কাটুনে ভরা বিরিয়ানির প্যাকেট। রিকশাওয়ালা, ভিক্ষুক কিংবা পথচারীদের যাকেই তাদের খাবার দেওয়ার মতো মনে হচ্ছে, তাদের হাতেই ধরিয়ে দিচ্ছে একটি করে বিরিয়ানির প্যাকেট।

খাবার প্যাকেট পেয়েছেন মিরাজ আলী নামে এমন একজন রিকশাওয়ালার সঙ্গে কথা বলে । খাবার কারা দিল জানতে চাইলে মিরাজ সামনের দিকে আঙুল দিয়ে ইশারা করে বললেন, ‘ওই মামারা দিছেন। দুপুরের খাওন হয়ে যাইবো।’

তবে কী উপলক্ষ্যে তিনি খাবার পেলেন সেটা জানেন না মিরাজ আলী। তাকে যখন বলা হলো, আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই খাবার দেওয়া হচ্ছে, তখন আনুমানিক ৪০ বছর বয়সী মিরাজের মুখটা একটু কালো হয়ে গেল। এরপর তিনি বলেন, ‘ক্যাসেটের ফিতায় আইয়ুব বাচ্চুর গান অনেক শুনছি। এখনো মোবাইলে শুনি। উনি মারা যাওয়ার দিন অনেক কষ্ট পাইছিলাম। কিন্তু দিনটা মনে রাখি নাই।’

অসংখ্য গানপ্রেমীর প্রিয় গায়ক আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম হয়েছিল ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে। তার সংগীতজীবন শুরু হয় ১৯৭৭ সালে। ব্যান্ড জগতে প্রবেশ করেন ১৯৭৮ সালে। প্রথম গাওয়া গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’। ১৯৮০ সালে আইয়ুব বাচ্চু যোগ দেন সোলস ব্যান্ডে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি দলটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরের বছর ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড (এলআরবি) ব্যান্ডদল গঠন করেন। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই দলটির মেইন ভোকাল ছিলেন।

সোলস-এ থাকাকালীন প্রকাশ হয় বাচ্চুর প্রথম একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। তবে তার সফলতার শুরু দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’র মাধ্যমে। ৪০ বছরের গায়কী জীবনে ১২টি ব্যান্ড, ১৬টি একক ও বহু মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে আইয়ুব বাচ্চুর। গান গেয়েছেন বেশ কিছু চলচ্চিত্রেও।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আইয়ুব বাচ্চু অসংখ্য দর্শকপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। সে তালিকায় ‘সুখ’, ‘একদিন ঘুম ভাঙা শহরে’, ‘ফেরারি মন’, ‘এই রুপালি গিটার’, ‘হাসতে দেখো’, ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘চলো বদলে যাই’সহ আছে বহু নাম।

- Advertisement -

Read More

Recent