ক্রিকেটার আল আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ক্রিকেটার আল আমিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

আদালতে হাজির না হওয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার আল-আমিন হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

স্ত্রী ইসরাত জাহানের করা পারিবারিক সহিংসতা আইনের মামলায় বুধবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন এ আদেশ দেন।

মামলায় এদিন আল আমিন আদালতে হাজির হতে না পারায় আইনজীবী সময়ের আবেদন করেন। একই সঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত বাদীপক্ষের আবেদন গ্রহণ করে পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

বাদীর আইনজীবী মো. শামসুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত ৬ অক্টোবর শুনানিতে আল আমিন আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দাখিল করেন। জবাবে তিনি উল্লেখ করেন, গত ২৫ আগস্ট স্ত্রীকে তিনি রেজিস্টার্ড তালাকের নোটিশ পাঠিয়েছেন। যেহেতু তালাক হয়েছে, তাই তিনি স্ত্রীর প্রাপ্য মোহরানা ও ইদ্দতকালীন খরপোষ দিতে রাজি আছেন। আর দুই সন্তানের ভরণপোষণ তিনি নিয়মিত দিয়ে যাচ্ছেন।

তবে স্ত্রী তালাকের নোটিশ পাননি বলে জানান।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর স্ত্রী ইসরাত জাহানের করা মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পান আল-আমিন।

গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলা দায়ের করেন ইসরাত জাহান। ওইদিন আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর আল আমিনকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন।

একই সাথে বসবাসের অধিকার, মাসিক ভরণপোষণ ও সন্তানদের খরচ দাবি করে এ মামলা করেন বাদী।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর ইসলামী শরিয়া মোতাবেক ইসরাত জাহান ও আল-আমিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে ইংরেজি ভার্সনে কেজিতে পড়ালেখা করছে। বেশ কিছুদিন ধরে আল-আমিন স্ত্রী ও সন্তানদের ভরণপোষণ প্রদান করেন না এবং খোঁজ না নিয়ে এড়িয়ে চলছেন। যোগাযোগও করেন না।

মামলায় আরও বলা হয়, গত ২৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে আল আমিন বাসায় এসে স্ত্রীর কাছে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। ইসরাত জাহান টাকা দিতে অস্বীকার করলে আল-আমিন তাকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষিসহ লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। সংসার করবেন না বলে জানান। এরপর ইসরাত জাহান ৯৯৯-এ টেলিফোন করে সাহায্য চাইলে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। এ ঘটনায় ১ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় যৌতুক আইনের একটি মামলা করা হয়।

মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর আল-আমিন তার মায়ের মাধ্যমে জানান, ইসরাতের সাথে সংসার করবেন না এবং সন্তানদের ভরণপোষণও দেবেন না। প্রয়োজনে বাসা থেকে বের করে দিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেবেন। পরকীয়ায় আসক্তির কারণে একাজ করেছেন এবং একজন মহিলার সাথে উঠানো ছবি ইসরাতের কাছে পাঠান আল আমিন।

মামলায় বলা হয়, আল-আমিন স্ত্রী-সন্তানদের বাসা থেকে বের করে অন্যত্র বিয়ে করবেন বলে জানান। দুই বছর ধরে আসামি বাদীর খোঁজখবর নেন না এবং বাসায় নিয়মিত থাকেন না। যার কারণে ইসরাত তার দুই সন্তানসহ বসতবাড়িতে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করার অধিকারসহ মাসিক ভরণপোষণ দাবি করে মামলাটি দায়ের করেন। জীবন ধারণের জন্য ৪০ হাজার, দুই সন্তানের ভরণপোষণ ও ইংলিশ মিডিয়ামে লেখাপড়া বাবদ ৬০ হাজার টাকা আল-আমিনের কাছে পাওয়ার হকদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য, যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে গত ১ সেপ্টেম্বর আল আমিনের স্ত্রী ইসরাত জাহান আরেকটি মামলা করেন। সে মামলায় গত ৭ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন পান আল আমিন। সূত্র : ঢাকাটাইমস

- Advertisement -

Read More

Recent