শুক্রবার - এপ্রিল ২৬ - ২০২৪

অক্সিজেন ছাড়াই বাঁচতে পারে এই প্রাণী!

অক্সিজেন ছাড়া কোনও প্রাণী বাঁচতে পারে না। কিন্তু, বর্তমানে কয়েকজন বিজ্ঞানী এমন একটি প্রাণী খুঁজে পেয়েছেন, যা অক্সিজেন ছাড়াও বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকতে পারে। এই আবিষ্কার প্রাণীজগৎ সম্পর্কে ধারণা আমূল বদলে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

- Advertisement -

কী সেই আবিষ্কার
সম্প্রতি ইসরায়েলের তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মাত্র ১০টি কোষে তৈরি একটি পরজীবীর খোঁজ পেয়েছেন। এর বৈজ্ঞানিক নাম হেনেগুয়া সালমিনিকোলা (Henneguya salminicola)। এই প্রাণীটি দেখতে জেলিফিশ ও প্রবালের মতো। স্যালমন মাছের পেশীতে বাস করে এই প্রাণী। গবেষকদের এই আবিষ্কারে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে গোটা বিশ্বে।

অ্যারোবিক রেসপিরেশন বা সবাত শ্বসন
এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অধ্যাপক ডরোথি হিউচন। তিনি বলেন, মানুষ এবং সমস্ত জীবজন্তু ‘অ্যারোবিক রেসপিরেশন’-এর ওপর নির্ভরশীল। অর্থাঃ শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন আবশ্যক। কিন্তু, হেনেগুয়া সালমিনিকোলা অ্যারোবিক রেসপিরেশনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ডরোথি আরও জানিয়েছেন, শরীরে শক্তি উৎপাদনের জন্য সবাত শ্বসন হল অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু, যে প্রাণীর খোঁজ পাওয়া গেছে, জীবজগতের প্রথাগত ধারণার বাইরে থেকেও সেটি বেঁচে রয়েছে।

পার্থক্য কোথায়
অধ্যাপক ডরোথির কথায়, এই পরজীবীর শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম নেই। ফলে এদের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের একেবারেই প্রয়োজন হয় না। বিশ্বের প্রতিটি প্রাণীর দেহে প্রচুর পরিমাণে মাইটোকন্ড্রিয়া পাওয়া যায়। দেহে শক্তি বা এনার্জি উৎপাদনে যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেকারণেই মাইট্রোকন্ড্রিয়াকে ‘কোষের শক্তিঘর’ বলা হয়। অক্সিজেন গ্রহণ করলে তবেই তা শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। যে প্রাণীর দেহে সেই শক্তি তৈরির জায়গাই নেই, তার অক্সিজেন নেওয়ার প্রয়োজনও হয় না।

কোন পথে বিবর্তন
এই পরজীবীর কীভাবে বিবর্তন হল, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি গবেষকরা। তাদের অনুমান, মাছের শরীর থেকেই হয়তো এই পরজীবী প্রয়োজনীয় এনার্জি জোগার করে। কিন্তু অ্যানএরোবিক বা অবাত শ্বসনকারী ব্যাকটিরিয়াগুলোও তো অক্সিজেন ছাড়াই বাঁচে। তাহলে ওই সমস্ত ব্যাকটিরিয়ার সঙ্গে হেনেগুয়ার ফারাক কোথায়? ডরোথির ব্যাখ্যা, ‘জলভাগে বিভিন্ন জীব যেভাবে জীবনধারণ করে, সেখানে অক্সিজেন গ্রহণ না করেও শক্তি উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু হেনেগুয়ার শারীরিক গঠন ঠিক এ রকম নয়। হয়তো এটি যে প্রাণীর শরীরে বসবাস করে, তার থেকে শক্তি টেনে নেয়।’

সূত্র: লাইভ সায়েন্স

- Advertisement -

Read More

Recent